সিএইচটি কমিশন নিয়ে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সাংবাদিক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট জনাব নাজমুল আহসানের লেখা “সিএইচটি কমিশন, গো হোম, ইউ আর ড্রাংক” লেখাটি pahar24.com এ পড়লাম। মোটামুটি লেখার হাত ভালো বলতে হবে লেখকের। তিনি খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন কিভাবে পাহাড়িদের উপর সিএইচটি কমিশন দয়া বর্ষণ করার মাধ্যমে সেটেলারদের উপর অন্যায় করছে এবং তিনি লেখায় বারবার বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিষয়টিও এনেছেন।
লিংক “সিএইচটি কমিশন, গো হোম, ইউ আর ড্রাংক”
লেখায় তিনি স্বীকার করেছেন তিনিও নিরপেক্ষ নন। হ্যাঁ, আমরা কেউ নিরপেক্ষ নই। নাজমুল আহসানও নন, আমিও নই। তিনি কিসের পক্ষে দাড়িয়েঁছেন সেটা তিনি বলেছেন। এবার আমার পালা। আমি কার পক্ষে দাঁড়াচ্ছি সেটা সহজেই বুঝতে পারা যায়। আমি দাঁড়াচ্ছি নিপীড়িত পাহাড়িদের পক্ষে, সেটেলার-আর্মিদের বিপক্ষে।
তিনি লেখার শুরুতেই নিজেকে বাঙালি জাতীয়তাবাদের এক সৈনিক পরিচয় দিয়েছেন বিভিন্ন কথার মাধ্যমে। একটু উদাহরণ দিই, “……আর দশটা ছেলের মতো আমার সোনার বাংলা গাইতে গাইতে গায়ের লোম খাড়া হয়ে যায়। বাংলাদেশ ক্রিকেটে হেরে গেলে মন খারাপ করে বাংলাদেশের খেলা আর দেখবো এই ধনুকভাঙা পণ করে পরের খেলায় আবার সেই খেলা দেখতে বসে যাই। হ্যাঁ, আমি বাঙালি, পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালি, সারাদেশের আর দশটা যুবকের মতো লাল-সবুজ পতাকা দেখলে শিহরণ বইয়ে যায়…..”। তিনি আরো বলেছেন, সংখ্যালঘুদের উপর হামলা করা হলে তিনি কুঁকড়ে যান লজ্জায়। কিন্তু দেশের কথা ভেবে সব দুঃখকে সয়ে যায় যদিও জানেন মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এভাবে তিনি প্রথমেই আবেগকে প্রশয় করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলেন জাতীয়তাবাদ নামক এক উচ্চাসনে যেখানে গোটা দেশের মানুষকে একসূত্রে গাঁথা যায়।
এরপর তার লেখা পড়লে বুঝি মনে হবে তিনি বাঙালি জাতীয়তবাদের ধারক ও বাহক আর যাদের বিরুদ্ধে লিখছেন তারা নিশ্চয়ই এমন জাতীয়তাবাদের বিরোধী। মনে হতেই পারে, এটা স্বাভাবিক। তিনি একবারও ভেবে দেখেননি অথবা জানেন না যে, বাংলাদেশের প্রতি তাঁর মমত্ত্ববোধের যে বহিঃপ্রকাশ তিনি দেখিযেছেন একই বহিঃপ্রকাশ দেশের ক্ষুদ্র জাতিস্বত্ত্বাও করে। ক্রিকেটে বাংলাদেশের পরাজয়ে তারাও ব্যথিত হয়, মহিলা ফুটবলের সাফল্যে তাদের বুক ভরে ওঠে (প্রসঙ্গত যে, মহিলা ক্রিকেট ও ফুটবল দলে কিছু পাহাড়িও খেলাধুলা করেন। তারা যদি দেশকে ভালো না বাসতেন তাহলে এভাবে সাফল্যে অবদান রাখাটা কি হিসেবে অবিহিত করবেন?)। দেশের গার্মেন্টস শিল্পে বর্তমানে যে দুরাবস্থা চলছে তা দেখে আমার পরিচিত কিছু বড় ভাই সে শিল্প ত্যাগ করে পাহাড়ে এনজিও চাকরি করছেন। কারণ, সেখানে বেতন ভালো দেয়া হলেও শুধুমাত্র নিরীহ মানুষদের উপর নিপীড়ন করা হচ্ছে দেখে সহ্য করতে পারেননি। আমরা মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখি, অমানুষকে অমানুষ। মানুষকে পশুর স্তরে নামানোর কাজ যারা করে তাদেরও ঘৃণা করি। দেশের লাল-সবুজ পতাকা আর জাতীয় সংগীতও আমাদের মনে দোলা দেয়। নিজস্ব মাতৃভাষা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত, সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েও এই পাহাড়িরা দেশকে তবুও ভালোবাসে নিজের মাতৃভূমি বলে। লেখক এখানে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নিজের দেশপ্রেমের পরিচয় দেয়ার মাধ্যমে কি ইঙ্গিত করেছেন সেটা আসলে প্রতিটি বুঝদার মানুষ অতি সহজেই বুঝতে পারবেন।
লেখক কিসের সাথে কি মিলিয়েছেন সেটা বুঝতে একটু কষ্ট হবে। যারা পাহাড় সম্পর্কে জানেন না, পাহাড়ের ইতিহাস সম্পর্কে জানেন না তাদের অতিসহজেই বিশ্বাস করানো যাবে লেখকের লেখার কূটচালের মধ্য দিয়ে। তিনি একবারও বললেন না, জিয়াউর রহমানের সময়েই সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে বাঙালিদের সেখানে পুনর্বাসন দিয়েছিল। তিনি বলেছেন, “বাঙালি পাড়ি জমিয়েছেন”। এখানে পাড়ি জমানো আর পুনর্বাসন দেয়া দুইটি এক জিনিস না। তিনি লেখায় আর্মিদের কথাও আনেননি। তাহলে লেখক কি বুঝাতে চেয়েছেন যে, সেটেলার বাঙালি যাদের বলা হচ্ছে তারা নিজে নিজেই সেখানে পাড়ি জমিয়েছেন?? তানভীর মোকাম্মেলের কর্ণফুলীর কান্নায় কিছু সেটেলারের বিবৃতি আমরা দেখতে পাই। সেখানে তারা স্পষ্ট করে বলেছেন যে, সরকার তাদের জমির লোভ দেখিযে, রেশনের লোভ দেখিয়ে এখানে পুনর্বাসিত করেছে। তাহলে লেখক এখানে মিথ্যা তথ্য সরববাহ করেছেন শুধুমাত্র সহানূভূতি আদায়ের জন্য।
লেখক এখানে “life is not ours” বইয়ের যে চারটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে সেগুলোকে বলেছেন তীব্র বিতর্কিত। কিন্তু কোন পয়েন্টে, কোন যুক্তিতে সেটা বলতে পারেননি। ফলে এই বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেছেন, বইয়ের কারণে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং তিনি সেটা নিয়ে চিন্তিতও নন কারণ তিনি মহান দেশপ্রেমিক। তিনি মনে হয় জানেন না, লোগাং গণহত্যার পরপরই বহির্বিশ্বে বিশেষ করে জাপানে ৩০টিও বেশি সংস্থা একটি সেমিনার করে এই গণহত্যাকে কেন্দ্র করে। এর ফলশ্রুতিতে খালেদা জিয়া সরকারকে একসদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটিও গঠন করতে হয়। আর এমিনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ ঘটনা নিয়ে বিশাল প্রতিবেদনও প্রকাশ করে। অথচ, “life is not ours’ তৃতীয় সংস্করণে এটি প্রকাশিত হয় অনেক পরে, ১৯৯৭ সালে। তাহলে লেখক কিভাবে বললেন যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা দেয়া হয়েছে বইয়ের মাধ্যমে? গণহত্যা নিয়ে কোন বার্তা তো বইটি দেয়নি। তাহলে? বহির্বিশ্ব কি এমনি এমনি জেনেছে? লেখক মিথ্যাচার করেছেন সেটা স্পষ্ট এখান হতেই।
সেটেলারদের তিনি বাঙালি অভিহিত করেছেন ভালো কথা। কিন্তু এর প্রভাবে তিনি পুরো বাংলাদেশের বাঙালিদের সাথে একাত্ম করার একটা অপচেষ্টাও করেছেন। অথচ পাহাড়ের বাঙালিরা অর্থাৎ সেটেলাররা যে কি পরিমাণ নৃশংস কর্মকান্ড পাহাড়ে সংঘটিত করেছে সেটা কোনভাবেই পুরো বাংলাদেশের বাঙালিদের সাথে মিলানো যায় না। কিন্তু তার প্রচেষ্টা অব্যাহত তিনি রেখেছেন তার লেখার প্রতিটি অক্ষরে।
সেটেলারদের উপর ২টি গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে এই তথ্য তিনি দিয়েছেন এবং সেই সাথে ১১টি পাহাড়িদের উপর গণহত্যার কথাও স্বীকার করেছেন। এখান তথ্যগত ভুল রয়েছে। ১১টি নয়, ১৩টি গণহত্যা ঘটেছে পাহাড়ে যার শিকার সাধারণ পাহাড়িরা। এই প্রতিটি গনহত্যার কথা ইতিহাসে লিপিবদ্ধ আছে। সেটেলারদের উর ২টি গণহত্যা যে সংঘটিত হয়েছে তার কথা জানা নেই আমাদের। তিনি যদি সঠিকভাবে এসব তথ্য দিতেন তবে বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য হতো। স্রেফ মুখের কথায় চিড় ভিজে না। পাহাড়িদের উপর সংঘটিত গণহত্যাগুলোতে কে জড়িত ছিল সেটা তিনি আর উল্লেখ করেননি। কারণ পুরো বিষয়টিই তখন তার বিপরীতে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর তিনি ১৩টি গণহত্যাকে জায়েজ করার চেষ্টা করেছেন সেটেলারদের উপর চালানো ২টি গণহত্যার বিপরীতে অথচ সঠিক কোন তথ্য তিনি দিতে পারেননি। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করার মাধ্যমে লেখক কি বুঝিয়েছেন???
লেখক পাহাড়ের তিনটি সশস্ত্র পাহাড়ি সংগঠনের মধ্যকার সংঘাত, চাঁদাবাজি নিয়ে বলেছেন। খুবই ভালো কথা। এসব সংগঠনের বিরুদ্ধে আসলেই এসব অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু লেখক এটা বলেননি বাঙালি ছাত্র পরিষদের নেতারা “চাঁদাবাজি” নামক সামাজিক কর্মকান্ডে সাথে জড়িত থাকার কথা। কিছুদিন আগে এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গ্রেফতার হন চাঁদাবাজির অপরাধে এবং এর প্রতিবাদে ১টি খাগড়াছড়িতে সড়ক অবরোধও পালন করা হয়। এছাড়া পাহাড়ে সেটেলার সংগঠনগুলোর মধ্যে যে শিবির-ননশিবির এই দুই ধারা রয়েছে সেটা তিনি জানেন কিনা আমার জানা নেই। হয়তো জানেন, জেনেও মিথ্যাচার করে যাবেন পাহাড়িদের বিরুদ্ধে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাকে তিনি উল্লেখ করেছেন জাতিগত সমস্যার আধার হিসেবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এ সমস্যা ভূমি সমস্যা। জাতিগত সমস্যা এখানে তৈরি করা হয়েছে মাত্র। কারণ, পাহাড়ি-বাঙালি একথা বলার মাধ্যমে তিনি গোটা বাংলাদেশের সাধারণ বাঙালিদের সাথে সেটেলারদের একীভূত করে দিয়েছেন যেটি প্রায় সময় করে থাকে বাংলাদেশের মিডিয়ারা আর আর্মিরা। আর্মিরা এখানে জাতীয়তাবাদের ধুয়া তুলে উগ্রতার সৃষ্টি করে দিচ্ছে। জামাত-শিবিররা এখানে এই সুযোগ নিচ্ছে। সারা দেশে ধর্মের ধুয়া তুললেও তারা সেখানে ধুয়া তুলে বাঙালি জাতীয়তাবাদের। ফলে, জাতীয়তাবাদের স্লোগান দিলেও “নারায়ে তকবির, আল্লাহ হু আকবর” এই স্লোগান দিতে দেখা যায় কেন?? বাঙালি জাতীয়তাবাদ আর মুসলিম উগ্রতা কি এক জিনিস??
চ্যানেল ২৪ এর তালাশ অনুষ্ঠানের বিষয়কে তিনি সামনে নিয়ে এসেছেন। আমিও দেখেছি সেই পর্বটি। দুর্গম বান্দরবান অঞ্চলে মাদকের ব্যবসা করা হচ্ছে সে অনুষ্ঠানে সেটিই ছিল মুখ্য। বিভিন্ন দিক থেকে খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে বিষয়টি। লেখক এই সুযোগটাই নিয়েছেন খাগড়াছড়ির ক্ষেত্রে। খাগড়াছড়িতে মাদকের ব্যবসা প্রথম কে শুরু করে? আমি শিওর লেখকের জানা নেই। আর্মিরাই প্রথম হেরোইন ড্রাগের ব্যবসা শুরু করে পাহাড়ি তরুণসমাজকে পঙ্গু বানানোর প্রক্রিয়া হিসেবে্ এবং তারা পেরেছেও। এখন পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কোম্পানি তামাকের চাষ করছে সেগুলো না দেখেও ভান করেছেন লেখক। আর মাদকের বিষয়টি নিয়ে বলেছেন বিজিবি ক্যাম্পটি জরুরী। তাহলে যেখানে ক্যাম্প করা হচ্ছে তার আশেপাশে এতগুলো আর্মি ক্যাম্প, আনসার ব্যাটেলিয়ন ক্যাম্প। কয়েক কিলোমিটার দূরে আর্মির স্থায়ী সেনানিবাস রয়েছে কেন? তাদের কাজ কি সেখানে তাহলে?? বান্দরবানে মাদকের ব্যবসা বিরুদ্ধে দাড়িয়েঁছে আর্মি আর এখানে দাঁড়াতে হবে বিজিবিকে, এই শর্ত নাকি?? তাহলে আর্মি-আনসার-পুলিশ ক্যাম্প রাখার যৌক্তিকতা কি????
বাবুছড়ার ঘটনা নিয়ে তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। বিজিবি’কে অধিগ্রহণ দেয়া হয়েছিল বাবুছড়া ইউনিয়নে কিন্তু তারা জমি দখল করেছে দিঘীনালা ইউনিয়নের। তাহলে জমি দখল বা অধিগ্রহণ যাই বলি সে প্রক্রিয়া কি সঠিক ছিল?? আর সীমান্ত দখলকৃত এলাকা থেকে প্রায় ৬০-৭০ কিমি দূরে। বরং সীমান্তের কাছে আর্মি একটি ক্যান্টমেন্টও রয়েছে (সাজেক আর্মি ক্যাম্প)। এত দূরে সীমান্ত রক্ষার নামে দখল করা কোন সঠিকতার পর্যায়ে পড়ে?? লেখক এড়িয়ে গেছে এসব বিষয়।
ভারত থেকে শরনার্থী পাহাড়িরা এখানে এসে অন্যায়ভাবে বসতি গেড়েছেন বলে তিনি যা দাবি করেছেন সেটা মিথ্যা। কারণ আমি ঘটনাস্থল গ্রামে গিয়ে গ্রামবাসীর সাথে কথা বলেছি, এখানে তাদের বাপ-দাদার ভিটে মাটি। কাপ্তাই বাধেঁর কারণে ভিটেমাটি হারিয়ে অসহায় মানুষরা এখানে এসে বসতি গেড়েছিলেন তা আমরা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও জেনেছি। তাহলে কোনটি সত্য?? কাপ্তাই বাধেঁর ইতিহাস আগে না পাহাড়ে বিজিবিকে দেয়া অধিগ্রহণের ঘটনা আগে??? লেখকের মতে যদি অধিগ্রহণ ১৯৯১ সালে দেয়া হয় তাহলে তা নিশ্চয়ই ১৯৬০ সালের আগে নয়। লেখক মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে সবাইকে ধোঁকা দেয়ার প্ল্যান করছেন।
এখানে লেখক আরো কিছু বিষয় এনেছেন। উচ্ছেদ হওয়া মানুষগুলোকে স্কুলে পুনর্বাসন দিয়েছে ইউপিডিএফ। কিন্তু আমি ভিক্টিমদের কাছ থেকে শুনেছি, ইউএনও নিজে এসে স্কুলে পুনর্বাসন দিয়েছেন। আমি গত ১২ জুন তারিখে দিঘীনালা যাই। সেখানে তখন ভিক্টিম পরিবারগুলোকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল। মিথ্যাচার আর কাকে বলে??? সাংবাদিক পরিচয়কে তিনি কলংকিত করেছেন এসব মিথ্যাচার করার মাধ্যমে।
প্রথম আলোসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশকে তিনি বলেছেন মিথ্যা। অথচ তারাও বিষয়টা জানতেন না। ভিক্টিম পরিবারগুলো আমাকে ফোন করেছিলেন আগে এবং আমি এ নিয়ে ফেইসবুকে স্ট্যাটাসও দিয়েছিলাম। এরপর আমি পাইচিমং দাদাকে বিষয়টা জানাই। তিনি তার এক সাংবাদিক বন্ধুকে অবহিত করার পর তারা সবাই মিলে সেখানে যান। পরে জানতে পারি বিপ্লব রহমানও নাকি সেখানে গিয়েছিলেন। সাংবাদিক সৈকত দেওয়ান সম্পর্কে আমার ভাই। আমি ফোন করে নিশ্চিত হতে পারি যে তিনিসহ আরো সাংবাদিক সেখানে গিয়েছিলেন। আরো নিশ্চিত হওয়ার জন্য ভিক্টিমদের ফোন করি। তারাও একই কথা বলেন। তাহলে, এখানে মিথ্যা বলছে কে?? লেখক না সব পাহাড়িরা???
বাবুছড়ার ঘটনার মিথ্যাচার নিয়ে ব্লগে এর আগেও পোস্ট করা হয়েছিল রাষ্ট্রীয় আগ্রাসন ও চিরবধির বাংলাদেশ শিরোনামে। তাহলে এখানে আবার নতুন করে কিছু লিখলাম না। লেখক যদি এই পোস্ট পড়ে থাকেন তাহলে তার জন্য লিংক রাষ্ট্রীয় আগ্রাসন ও চিরবধির বাংলাদেশঃ দিঘীনালায় বিজিবি’র ব্যাটেলিয়ন স্থাপন, মিডিয়ার সেন্সরশিপ এবং কিছু অশ্রুত কণ্ঠের জবানন্দী
ভিক্টিম পরিবারগুলোর বিবৃতিকে তিনি বলেছেন অভিনয়। কি পরিমাণ নোংরা রুচির মানুষ হলে এসব বলা যায়!! তিনি এই পাহাড়িদের সাইকোলজি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, আমিই বরং লেখকের সাইকোলজি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চাই। আমি তাকে মানসিক হাসপাতাল থেকে ঘুরে আসার পরামর্শ দিচ্ছি।
বান্দরবানে মারমা এক স্কুলশিক্ষিকারকে ধর্ষণের দায়ে মোসলেম উদ্দিনকে পিটিয়ে মেরে ফেলে পাহাড়ি মেয়েরা। তিনি এই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ঠিক আছে, মেনে নিলাম। তাহলে থুমাচিং, সুজাতাসহ পাহাড়ের আরো ধর্ষণের ঘটনাগুলো কি তাহলে সেটেলাররাই ঘটিয়েছে? তিনি মনে হয় এটি মেনে নিয়েছেন এবং বিপরীত যুক্তি দেয়ার জন্য পিটিয়ে মেরে ফেলাকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন। কিন্তু ধর্ষণের ঘটনা মানবাধিকার লঙ্ঘনের পর্যায়ে পড়ে কিনা সেটা তিনি বলেননি। পাহাড়ে ক্রমাগত ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে আমার এক স্থায়ী বাঙালি বন্ধু আমাকে বলেছিলেন, “এরা হারামির জাত, এদের কারণে আমরাও পাহাড়িদের কাছে খারাপ হয়ে যাই”। লেখকও বাঙালি আর যিনি বলেছেন তিনিও বাঙালি। তাহলে দুইজনের কথার মাঝে এত ফারাক কেন???
লেখকের পোস্ট পড়ে মনে হয়ে হয়েছে তিনি পক্ষপাতদুষ্টভাবে একতরফা দায় চাপিয়েছেন একটি রাজনৈতিক দলের প্রতি। সব কিছুর পিছনে ইউপিডিএফকে দায়ী করেছেন লেখক। কেন?? উচলা ভান্তে ১০০ একর জমি দখল করেছেন এ সংক্রান্ত খবর তো কোন মাধ্যমে আসেনি। বরং এসেছে মুরংদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে এবং এটি করছে সেটেলার ব্যবসায়ীরা। আবারও বলতে হচ্ছে মুখের কথায় চিড় ভিজে না।
সিএইচটি কমিশনের উপর হামলার বিষয়ে লেখক বলেছেন বাঙালি ছাত্র পরিষদ, সমঅধিকার আন্দোলন এরা এত জনপ্রিয় ছিল না। তাহলে হামলার শক্তি কোথায় পেল?? লেখক বলেছেন জনগণের কথা। কথা সত্যি, পাহাড়ে এখন ৫৫% সেটেলার এবং হিসাবমতে তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। সেটেলারদের মাঝে কতটুকু জনপ্রিয় সেটার মাপকাঠি হয় যে সংগঠনগুলো পাহাড়িদের জমি দখলে সাহায্য করতে পারবে। এখন সমঅধিকার, বাঙালি ছাত্র পরিষদ পারছে সুতরাং সেটেলারদের কাছে তারা জনপ্রিয় হবেই। আর ডিজিএফআইয়ের অফিসের টিলা থেকে হামলা করা হয়েছে সেটা আমরা ভুলে যাইনি। এখানেও স্পষ্ট মিথ্যাচার লেখকের।
চাকমা রাজার বিয়েতে মদ পরিবেশনের মাধ্যমে তিনি কি বুঝাতে চেয়েছেন সেটা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। বিয়েতে মদ পরিবেশন পাহাড়ি সংস্কৃতিরই একটি অংশ। এখানে মদের বোতল রাখা হয় বিয়ে পড়ানোর সময়। কিন্তু সিএইচটি কমিশনের সদস্যদের এভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণের কোন মানে হয় না।
আমি গোটা লেখাটা সাজিয়েছি পাহাড়িদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের জবাব হিসেবে। সিএইচটি কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগের জবাব তারাই দিবেন, আমি নই। লেখক যদি কমিশনের বিরুদ্ধে কথা বলতে চায় তবে বলতে পারে। কিন্তু সাধারণ পাহাড়িদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে আমার এই পোস্ট। আর একটা কথা,pahar24 এর সাইটটিতে ঢুকে দেখলাম বিএনপি পন্থী সাংবাদিকদের ছড়াছড়ি। বিএনপিপন্থী সাংবাদিক মানেই পাহাড়ে তারা সেটেলার অর্থাৎ সমঅধিকার, বাঙালি ছাত্র পরিষদ পন্থী। সেখানে এই ধরণের পোস্ট লেখা হবে তা সহজেই অনুমেয়। তবুও এত মিথ্যাচারের জবাব না দিলে হয়তো সত্য আড়ালেই থেকে যাবে।
2 comments
14 pings
Skip to comment form ↓
Chakma Rupayon Talukder
জুলাই 11, 2014 at 5:49 পূর্বাহ্ন (UTC 6) Link to this comment
অজল তোমার অনেক গুলো লেখা পড়লাম, অনেক ভালো লাগলো, তুমি আরো লিখো।
Gyana Mitra Chakma
জুলাই 9, 2014 at 10:29 পূর্বাহ্ন (UTC 6) Link to this comment
right point
Arjyo Chakma
জুলাই 9, 2014 at 4:21 পূর্বাহ্ন (UTC 6) Link to this comment
লেখকের লেখনীর জোর থাকলে ও মানবিক দৃষ্টি শক্তির, মানবিক দৃষ্টি ভঙ্গির কোন জোর নেই। অন্যায় যে করে থাকুক না কেন ? সে তো অন্যায়কারী । সন্ত্রাস যে করুক সেই তো সন্ত্রাসী। সেখানে জাতপাতের কোনো ভেদাবেদ নেই। আর সন্ত্রাসী আর সন্ত্রাসকে প্রশ্রয়্দানকারী, অপরাধী আর অপরাধীকে প্রশ্রয়্দানকারী সমান অপরাধে অপরাধী।তার মানে সি এইস টি কমিশনের সদস্যদের উপর হামলার দায়ে সেইও একজন দোষী। কারণ সেই তো এই ঘটনার জন্য নিন্দা জানানোর পরিবর্তে সমর্থন যোগাচ্ছেন। এখানে লেখকের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে গোটা বাংলাদেশের সাংবাদিক গোষ্টিকে কলংকিত করলেন । কারণ লেখক পার্বত্য চট্টগ্রামের সত্যগুলো শাক দিয়ে মাছ ঢাকানোর ন্যায় সি এইস টি কমিশনের সদস্যদের উপর হামলার দায় এড়ানোর জন্য মিথ্যাচার করছেন । লেখকের কথায় বরাবর অপরাধীদের পক্ষে সাফাই গাওয়ার গুঞ্জন ধ্বনিত হচ্ছে। তাছাড়া লেখক সাফাই গাওয়ার আর লোক পেল না ! একজন ধর্ষকের পক্ষে সাফাই গাইতে গেলেন। নির্লজ্জ হলে এইভাবে অপরাধীদের পক্ষে অবস্থান নেওয়া যায়। হায়রে উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদী ধিক ধিক
Arjyo Chakma
জুলাই 8, 2014 at 9:32 অপরাহ্ন (UTC 6) Link to this comment
''সেটলার নাজমুল আহসানের জবাবের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তিযুক্ত দাতভাঙ্গা জবাব দেওয়া হয়েছে অজল বাবু আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ । ইউরোপের মাঠিতে অনেক বাঙালির সাথে দেখা হয়। কেউ আওয়ামীলীগ আর কেউ BNP । আমার কাছে ওরা জানতে চাই আমাদের জুম্মদের জন্য আওয়ামীলীগ সরকার ভালো নাকি বি এন পি সরকার ভালো ? এক কথায় আমি বলে দিই ! আমাদের জন্য কোনো দুটি দল ভালো নই ! কারণ পার্বত্য চট্টগ্রামের ইস্যুটির জন্য সরকার, দল বদল হলে ও কিন্তু তাদের কৌশল বদলায় না । তাই এই উগ্র জাতীয়তাবাদী বাঙালিরা জুম্মদের যে দলের সমর্থন করুক না কেন তার পরে ও সেই একজন উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদী…..
Shaherin Arafat
জুলাই 8, 2014 at 4:53 অপরাহ্ন (UTC 6) Link to this comment
Ajal, জনৈক নাজমুল আহসানের লেখাটি পড়লাম, তোমার জবাবটাও, এই শাণিত জবাবের জন্য তোমাকে ধন্যবাদ জানাই…
এখানে বেশি কথা বলার সুযোগ নাই বলেই মনে করি। অল্প কথায় কিছু বিষয় উল্লেখ করছি…
দ্বিতীয় সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বযুদ্ধের পর জাতি-রাষ্ট্রের নামে যতো রাষ্ট্র গড়ে উঠেছে, তা আদতে বহুজাতিক রাষ্ট্র, প্রধান্য বিস্তারকারী কোন জাতিসত্তার বুর্জোয়া শ্রেণী এবং মধ্য শ্রেণী পুঁজির বিকাশ ঘটানোর মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান শক্ত করে তোলে, আর সাম্রাজ্যবাদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে অন্যান্য জাতিসত্তাকে সেই বিকশিত জাতিসত্তার ভেতর ধারণ করার এক নয়া বেনিয়া ঔপনিবেশিক সংস্কৃতির আবির্ভাব ঘটে…
এই সংস্কৃতির জাতীয়তাবাদ কখনো উগ্র রূপ ধারণ করতে পারে, কিন্তু তার সাথে সাম্রাজ্যবাদের সখ্যতা ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত… আর এই নয়া-ঔপনিবেশিক সংস্কৃতির বিকাশের সাথে সাথে তা বিভিন্ন জাতিসত্তার নিপীড়িত ও মুক্তিকামী গণশক্তিকেও বিচ্ছিন্ন করে রাখে পরস্পর থেকে, কখনো জাতীয়তাবাদের নামে, কখনো ধর্মের নামে, কখনো বর্ণ বা জাত-পাতের নামে…
জনৈক নাজমুল হাসান যে জাতীয়তাবাদ বা মানবিকতার দোহায় দিয়েছেন, সেটাও এই সংস্কৃতিরই ঔরসে জন্ম… কথিত প্রজন্ম চত্তরের নেতারা "গণজাগরণ মঞ্চ" তৈরীর সময়েও ঠিক একই মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। যেখানে স্লোগান ছিল – "আমি কে, তুমি কে, বাঙালী-বাঙালী", অথবা "বাঙলার হিন্দু, বাঙলার মুসলমান, বাঙলার বৌদ্ধ, আমরা সবাই বাঙালী", অথবা "জয় বাঙলা", এই আওয়ামী উগ্র জাতীয়তাবাদী স্লোগানেই তাদের পরিচয় নিহিত। কোন কোন নামধারী প্রগতিশীলদেরও এই স্লোগান এবং মঞ্চে উপবিষ্ট হতে দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে, আবার কোন কোন সুশীলদের আওয়ামীদের গলাধকরণও সহ্য করতে দেখা গেছে এ সময়ে। এখানে কথিত বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের যে বয়ান আওয়ামী বিরোধ থেকে জন্ম নিয়েছে, তার স্বরূপ কিন্তু ওই সাম্রাজ্যবাদপুষ্ট উগ্র জাতীয়তাবাদীদের থেকে ভিন্ন কিছু নয়। শুধুমাত্র নতুন বোতলে পুরনো মদ, বাঙালি জাতীয়তাবাদের জায়গায় নয়া-উদারনৈতিক বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ…
ভবিষ্যত প্রজন্মকে একটা লস্ট-জেনারেশন আকারে গড়ে তোলার প্রজেক্ট তারা বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে নিয়েছে। এই জেনারেশন পাহাড়ি হোক, বাঙালি হোক, বিহারি হোক, তা ওই সাম্রাজ্যবাদী নয়া-ঐপনিবেশিক সংস্কৃতির বাইরের প্রডাক্ট নয়…
আরো অনেক কথা বলার আছে এবং থাকবে, তা হয়তো পরবর্তীতে আরও বৃহৎ পরিসরে বলা সম্ভব হবে….
ধন্যবাদ…
Shaherin Arafat
জুলাই 8, 2014 at 4:52 অপরাহ্ন (UTC 6) Link to this comment
Ajal, জনৈক নাজমুল আহসানের লেখাটি পড়লাম, তোমার জবাবটাও, এই শাণিত জবাবের জন্য তোমাকে ধন্যবাদ জানাই…
এখানে বেশি কথা বলার সুযোগ নাই বলেই মনে করি। অল্প কথায় কিছু বিষয় উল্লেখ করছি…
দ্বিতীয় সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বযুদ্ধের পর জাতি-রাষ্ট্রের নামে যতো রাষ্ট্র গড়ে উঠেছে, তা আদতে বহুজাতিক রাষ্ট্র, প্রধান্য বিস্তারকারী কোন জাতিসত্তার বুর্জোয়া শ্রেণী এবং মধ্য শ্রেণী পুঁজির বিকাশ ঘটানোর মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান শক্ত করে তোলে, আর সাম্রাজ্যবাদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে অন্যান্য জাতিসত্তাকে সেই বিকশিত জাতিসত্তার ভেতর ধারণ করার এক নয়া বেনিয়া ঔপনিবেশিক সংস্কৃতির আবির্ভাব ঘটে…
এই সংস্কৃতির জাতীয়তাবাদ কখনো উগ্র রূপ ধারণ করতে পারে, কিন্তু তার সাথে সাম্রাজ্যবাদের সখ্যতা ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত… আর এই নয়া-ঔপনিবেশিক সংস্কৃতির বিকাশের সাথে সাথে তা বিভিন্ন জাতিসত্তার নিপীড়িত ও মুক্তিকামী গণশক্তিকেও বিচ্ছিন্ন করে রাখে পরস্পর থেকে, কখনো জাতীয়তাবাদের নামে, কখনো ধর্মের নামে, কখনো বর্ণ বা জাত-পাতের নামে…
জনৈক নাজমুল হাসান যে জাতীয়তাবাদ বা মানবিকতার দোহায় দিয়েছেন, সেটাও এই সংস্কৃতিরই ঔরসে জন্ম… কথিত প্রজন্ম চত্তরের নেতারা "গণজাগরণ মঞ্চ" তৈরীর সময়েও ঠিক একই মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। যেখানে স্লোগান ছিল – "আমি কে, তুমি কে, বাঙালী-বাঙালী", অথবা "বাঙলার হিন্দু, বাঙলার মুসলমান, বাঙলার বৌদ্ধ, আমরা সবাই বাঙালী", অথবা "জয় বাঙলা", এই আওয়ামী উগ্র জাতীয়তাবাদী স্লোগানেই তাদের পরিচয় নিহিত। কোন কোন নামধারী প্রগতিশীলদেরও এই স্লোগান এবং মঞ্চে উপবিষ্ট হতে দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে, আবার কোন কোন সুশীলদের আওয়ামীদের গলাধকরণও সহ্য করতে দেখা গেছে এ সময়ে। এখানে কথিত বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের যে বয়ান আওয়ামী বিরোধ থেকে জন্ম নিয়েছে, তার স্বরূপ কিন্তু ওই সাম্রাজ্যবাদপুষ্ট উগ্র জাতীয়তাবাদীদের থেকে ভিন্ন কিছু নয়। শুধুমাত্র নতুন বোতলে পুরনো মদ, বাঙালি জাতীয়তাবাদের জায়গায় নয়া-উদারনৈতিক বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ…
ভবিষ্যত প্রজন্মকে একটা লস্ট-জেনারেশন আকারে গড়ে তোলার প্রজেক্ট তারা বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে নিয়েছে। এই জেনারেশন পাহাড়ি হোক, বাঙালি হোক, বিহারি হোক, তা ওই সাম্রাজ্যবাদী নয়া-ঐপনিবেশিক সংস্কৃতির বাইরের প্রডাক্ট নয়…
আরো অনেক কথা বলার আছে এবং থাকবে, তা হয়তো পরবর্তীতে আরও বৃহৎ পরিসরে বলা সম্ভব হবে….
ধন্যবাদ…
Shakkhar Chakma
জুলাই 8, 2014 at 4:24 অপরাহ্ন (UTC 6) Link to this comment
অনেক যুক্তি যুক্ত লেখা। ধন্যবাদ
Aloran Khisa
জুলাই 8, 2014 at 3:31 অপরাহ্ন (UTC 6) Link to this comment
Odong [email protected] অজল যুক্তি দিয়ে যেটা বুঝাতে চেয়েছে তা আসলে আমাদের সবার মতামত।
ধন্যবাদ অজলকে এমন লেখনীর জন্য ।
Nue Nue Prue
জুলাই 8, 2014 at 9:22 অপরাহ্ন (UTC 6) Link to this comment
Ai lekhar jono lekhok ke dhonnobad.
FBte Pinaki Bhattacharya-er akti poste Farid suman namok Bandarbaner namer akjon kothito sangbadik ki likheche aktu dekhen.
Farid Suman : আমি যেহেতু বান্দরবানের বাসিন্দা তাই রাম জাদির (বুদ্ধ ধাতু জাদি নয়) জমি নিয়ে বিরোধের প্রসঙ্গটা বলি। উ পঞঞা জোত থেরো নামের এই ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে ভূমিদস্যুতার অভিযোগ এনে ভুক্তভোগীরা একাধিক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এ ব্যাপারে মামলাও চলছে। সম্প্রতি বান্দরবানের জেলা প্রশাসক তদন্ত শেষে বলেছেন, রাম জাদির ব্যবহার্য জমির এক ইঞ্চিরও কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। এরপর আবার, বর্তমানে দখলকৃত জমি ছাড়াও আশেপাশে শ্রমিক, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের কেনা জমির ওপর জাদির লোকজন ধর্মীয় পতাকা গেঁড়ে জমিগুলো দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে।
বিজিবি’র সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স স্থাপনের জন্যে ১০ একর খাস জমি এবং ১৫ একর অধিগ্রহণকৃত জমি নেয়া হচ্ছে। এখানেও রাম জাদির কোনো জমি নেই। উনারা আপত্তি তুলেছেন- বিজিবি’র স্থাপনা হলে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পবিত্রতা ক্ষুন্ন হতে পারে সেই আশঙ্কায়।
সমস্যা হচ্ছে- কিছু মানুষ ও প্রতিষ্ঠানের পরামর্শে এবং অভিযোগে ঢাকা থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মানুষ একটা প্রি-ডিফাইনড মানসিকতা নিয়ে এখানে আসেন এবং গাইডেড ভ্রমণ শেষে ফিরে গিয়ে গাইডেড প্রতিবেদন ও মতামত প্রকাশ করেন। তখন পাহাড়ের প্রকৃত সমস্যাটা আড়াল হয়ে যায় এবং একটা ঘোলাটে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। কোনো সমস্যাকে এক চোখে দেখা হলে তার স্বরূপ ধরা পড়েনা। যেমন কেউ যদি রিক্সাওয়ালাকে চড় দেয়, উপস্থিত লোকেরা চটজলদি গরীবের পক্ষে অবস্থান নেন। কিন্তু রিক্সাওয়ালাও যে অন্যায়-অনাচার করতে পারে সে কথা কেউ একবারও ভেবে দেখেন না।
পাহাড়ের হাজার হাজার একর জমি কর্পোরেটদের দখলে চলে গেছে। রাবার বাগানের নামে জমি লীজ নিয়ে, সেটেলারদের কাছ থেকে প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ লোকজনের সহায়তায় জমির কাগজ কিনে, নামে-বেনামে নানাভাবে তার চেয়েও দ্বিগুণ তিনগুণ জমি জবরদখল করে পাহাড়িদের গ্রাম উচ্ছেদ করেছে এমন নজির শত শত আছে। এসব জবরদখলকারীদেরকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সহায়তা করেন পাহাড়িদেরই শক্তিশালী এবং সুবিধাভোগী একটি অংশ। কিন্তু ওইসব গাইডেড বুদ্ধিজীবিরা শক্তিশালী এসব মহলের বিরুদ্ধে কথা না বলে, প্রকৃত সমস্যায় আলোকপাত না করে শুধু সেটেলারদের ওপর চড়াও হন। সেটেলাররা গুচ্ছগ্রামে রিলিফ খেয়ে যে জীবন যাপন করেন, সেটা মানুষের জীবন নয়। ভিন্ন প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রতিবেশে তারাও প্রকৃতপক্ষে উদ্বাস্তু এবং নোংরা রাজনীতির শিকার। ঘুরেফিরে ওই উদ্বাস্তু মানুষগুলোই যেন সবার খবরদারির একমাত্র টার্গেট।
‘তবে পার্বত্য জনগণ নিশ্চয় উপলব্ধি করেন, প্রকৃত বাঙালি তাদের শত্রু নয়’ – বাঙালি পরিচয় নিয়ে পাহাড়ে থাকতে এলে বুঝতে পারবেন, কে আপনাকে শত্রু ভাবে আর কে বন্ধু ভাবে। ঢাকায় যারা নিজেদেরকে খুব অসহায় হিসেবে প্রচার করেন, এখানে এলে দেখবেন তাদের ভিন্ন চেহারাটা কতো বীভৎস। এবং এরা অবশ্যই পাহাড়ের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ নয়। এক শ্রেণীর উগ্রবাদী নব্য শিক্ষিত মহল যারা বিভিন্ন দাতা সংস্থার পয়সায় শরীরে বাড়তি মেদ এবং চেহারায় বাড়তি চেকনাই জমিয়েছে। এরা মোাটেও পাহাড়ের প্রকৃত বাসিন্দাদের রিপ্রেজেন্ট করেনা, বরঞ্চ ভুল তথ্য, ভুল অভিযোগ এবং সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দেশের বাকি এলাকার মানুষদের চিন্তাকে বিভ্রান্ত করে যাচ্ছে।
সংখ্যালঘু, নারী অধিকার, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, বঞ্চিত, নিপীড়িত- এসব শব্দ অতিব্যবহারে এবং অপব্যবহারে ভঙ্গুর হয়ে গেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে যে মার খায়, নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে দেখলে বুঝবেন, সে সত্যিই মার খাওয়াটা ডিজার্ভ করে।
Jummo Dhan Changma
জুলাই 8, 2014 at 2:36 অপরাহ্ন (UTC 6) Link to this comment
pahar24 e lekhati pore sobchaite jei jinista kharap laglo seta holo parbotyo chottograme soisob theke suru kore aaj obodi pojjontw thaka obostai ekjon lekhok ki poriman daha mittya kotha diye lekhonir morjadake khunno korte pare ta sohosai prokas pai tini joto boro lekhonir lekhok hon nah keno..!! ar ei o ami asshanito hoi sangbadik fajle elahi kemon kore ebong kon uddesso nijer songbadpotre ei rokom lekha chapan..! ei lekhanoke sudu bangali ugro jatiyobad chara kono niropekko vumika choke pore nah..!!
Nibaran Chakma
জুলাই 8, 2014 at 2:06 অপরাহ্ন (UTC 6) Link to this comment
Add a comment…
Fema Milton Chakma
জুলাই 8, 2014 at 1:50 অপরাহ্ন (UTC 6) Link to this comment
অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা
Ashis Chakma Paran
জুলাই 8, 2014 at 1:07 অপরাহ্ন (UTC 6) Link to this comment
ধন্যবাদ অজলোতে দাদাকে যুক্তি সহকারে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য
Odong Chakma
জুলাই 8, 2014 at 12:18 অপরাহ্ন (UTC 6) Link to this comment
ধন্যবাদ অজল লেখাটার জন্যে। লেখার জবাব লেখার মাধ্যমে দিতে হবে। যুক্তিতে মুক্তি। ধন্যবাদ।
Tapan Chakma Borbohoja
জুলাই 8, 2014 at 11:15 পূর্বাহ্ন (UTC 6) Link to this comment
good…!
Raat Jaga Tara
জুলাই 8, 2014 at 11:12 পূর্বাহ্ন (UTC 6) Link to this comment
je ba jara paharer etihash jane na tader pahar somporkito kotha bolar odhikar nei. age etihash valovabe jene niye tobei kotha bola uchit. sottyo mitthya mishron kore kotha na bola valo…. ei kothati ami oi sangbadik k uddessho kore bollam.